পুজোর ছুটিতে চললাম ঘরপানে
কতযে স্বপ্ন রয়েছে মোর প্রাণে,
রেলপথ ছেড়ে চললাম মেঠোপথে
সহসা এক নারীর দেখা মেলে মাঝপথে।
দূর হতে দেখি নয়ন মেলে,
জীর্ণ বসনা এলোমেলো চুলে
কোনো এক পড়ন্ত যৌবনা পাগলিনী
খুব কাছে এসে চিনি, ও’যে রেশমী!
তড়িঘড়ি ছুটি ঘর মুখে,
জড়িয়ে ধরে আলো ভরা চোখে
বাকরুদ্ধ হয়ে বলি, মা রেশমীর কি হলো ?¬
জবাব দাও মা, ও কেন পাগলীনি হলো ?
মা কোন জবাব না দিয়ে থাকে নিরুত্তর, চুপচাপ
চোখে থেকে জল পড়ে টপ্ টপ্
রেশমী আমাদের পরিজন নয়, প্রতিবেশি
বয়সে আমার চেয়ে হবে না দু’য়ের বেশি
কানামাছি, বৌ-বৌ কত করেছি খেলা,
আনন্দে ভরা সেই শৈশব বেলা।
মোর বড় ভাই পবন ভালোবাসতো রেশমীকে
আমিও! তবে ভাবী হিসেবে দেখতাম তাকে!
কি জানি কোন এক ঘটনায়,
হাসি-কান্নার সবকিছু ভরে দিল বেদনায়।
আমার ও রেশমীর বাবার হলো মতান্তর,
যেভাবেইে হোক রেশমীকে করতে হবে স্থানান্তর।
একদিন দেখি, সানাই বাজছে রেশমীদের দ্বারে,
বিয়ে পিড়িতে রেশমী’ জানলাম এক খবরে ।
রাঙাবধূকে দেখেছি অশ্রুমাখা নয়নে
পালকীতে চড়ে চলল স্বামীর ঘর পানে।
রাগ অভিমানে ছাড়লাম বাড়ী এক সকালে,
ইচ্ছে ছিল থাকব অজ্ঞাতবাসে
হঠাৎ বাড়ী থেকে পেলাম এক খবর
রেশমীর স্বামী নেই, বলল বড় ভাই।
কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে
ফিরে এলো সে সিঁদুর হারিয়ে।
আমার ও দাদার ইচ্ছা ছিল, আনব ওকে ঘরে
রাজি নই’ বাবার উত্তর এলো মোদের তরে
সমাজ, সামাজিকতার ও ধর্মের দোহাই
ইচ্ছে ছিল ভেঙ্গে সবগুলোকে শোয়াই
অতপর, বছরখানেক পর
রোজগারের ভার পড়ে রেশমীর উপর।
গার্মেন্টসে চাকুরী হবে শহরে
ছেড়ে যায় বাড়ী ঘর রেখে।
ছ’মাস নরকবাসে থেকে
চলো এলো পালিয়ে ঘরপানে
সবাই বলে, সে আজ ন্ষ্টা
সমাজের চোখে সে আজ ভ্রষ্টা।
ঠাঁই পেল না বাবা মার কোলেতে
এই দুঃখ সে পারল না সহিতে
সমাজে সে আজ পাগলিনী
কিন্তু কেন সে আজ পাগলিনী, হে মোর দেশজননী?
No comments:
Post a Comment